গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুর কয়েকদিন পর তার চেয়ারম্যান পদটিও শূন্য ঘোষনা করা হয়। শূন্যস্থানে পুনরায় ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করতে হয় নিয়ম অনুয়ারী। সে হিসেবে গত ডিসেম্বরের স্বপন চেয়ারম্যানের শূন্য পদে উপনির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারনে শুধু ফতুল্লায় নয় সারাদেশেই সকল প্রকার নির্বাচন বন্ধ ছিলো। জাতীয় নির্বাচন শেষে এখন শুরু হয়ে উপজেলা নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচনের আমেজ। আগামী ৯মার্চ ফতুল্লা ইউপিতে স্বপন চেয়ারম্যানের শূন্য পদে উপনির্বাচনের নির্বাচনের তারিখ নির্ধারন করা হয়েছে।

সেই নির্বাচনে রয়েছে খোদ আওয়ামীলীগেই রয়েছে একাধিক প্রার্থী। সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছে থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলী,সাধারন সম্পাদক মো.ফাইজুল ইসলাম,থানা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ ফরিদ আহমেদ লিটন ও কার্যকরী সদস্য হাজী আবু মো.শরিফুল হকের নাম আর পাশাপাশি রয়েছে প্রয়াত স্বপন চেয়ারম্যানের সহধর্মীনি।

তবে নির্বাচনকে ঘিরে ভোটের আমেজ সৃষ্টির আগেই শুরু হয়েছে প্রার্থীদের নিয়ে জল্পনা-কল্পনা। আর এ জল্পনা-কল্পনা অন্যতম কারিগরের ভুমিকায় উঠেছে সাংসদ শামীম ওসমানের নামটি। এখানে তিনিই প্রথম কর্তা যার ইচ্ছেই সব কিছুর সমাধান অথ্যাৎ ভোটের মাঠে নেমে লড়াইয়ে অর্ন্তভুক্ত হয়ে যোগ্যতার বলে কেউ নির্বাচিত হয়ে চেয়ারম্যানের পদে অসীন হবেন সেই সুযোগ নেই শামীম ওসমানের নির্বাচনী এলাকায়। এখানে সবচেয়ে বেশী যে জিনিসটির প্রয়োজন সেটা হলো কর্তার আর্শীবাদ। যার উপর কর্তার আর্শীবাদ থাকবে সেই হবেন ফতুল্লা ইউপির পরবর্তী চেয়ারম্যান। আর এ চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য নাকি প্রার্থীরা সেই কর্তা দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক ফতুল্লা ইউপির অনেক ভোটার বলেন,ভাই আপনারাতো জানেন যে,প্রয়াত নুর হোসেন চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর প্রায় ২যুগ সময় পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন লুৎফর রহমান স্বপন। জনৈক ব্যক্তির মাধ্যমে আদালতে একটি মামলা ঠুকে দিয়ে বিভিন্ন অযুহাতে স্বপন চেয়ারম্যানকে ভারমুক্ত করতে বাধা প্রদান করা হয়েছিলো। সেই মামলার রায় খারিজ হওয়ার পরও কিন্তু প্রায় ৬/৭ বছর পর্যন্ত তা অদৃশ্য কারনে ফাইল চাপা পড়ে। অবশেষে সাংবাদিকদের লেখনির কারনে সেই কর্তাই কিন্তু নির্বাচনের মাধ্যমে স্বপন চেয়ারম্যানকে ভারমুক্ত করে মুল চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করান। সে সময় ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পুর্বেই কিন্তু একাধিক দলীয় নেতারা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের মনোভাব প্রকাশ করলেও কর্তার কারনে তা ভেস্তে গিয়েছিলো।

আগামী ৯ মার্চের নির্বাচনকে ঘিরেও দেখা দিয়েছে সেই পুর্বের ইতিহাস। অথ্যাৎ সাংসদ শামীম ওসমান যাকে মনোনীত করবেন তিনিই হবেন ফতুল্লা ইউপির চেয়ারম্যান। তবে চেয়ারম্যান বা জনপ্রতিনিধি হতে গেলে সাধারন মানুষের সাথে সর্ম্পক থাকা ব্যক্তিই কি প্রার্থী হচ্ছেন কিনা তাহলে বুঝে উঠা যাচ্ছেনা। আবার বর্তমানে ভোটের মাধ্যমে নেতা কিংবা প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছেনা নির্বাচনী আসনগুলোতে। এখানে ‘টাকা’কেই আর্শীবাদ হিসেবে দেখছেন সাধারন ভোটাররা। যার ফলে পছন্দমত কোন ব্যক্তিকে নির্বাচিত করে নেতা কিংবা প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করা হতে তা উঠে গেছে প্রায় ১০/১২ বছর আগে। হোক সেটা যেকোন প্রকারের সংগঠন কিংবা সংস্থা।

এদিকে আসছে উপপনির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল আলী,সাধারন সম্পাদক মো.ফাইজুল ইসলাম,থানা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ ফরিদ আহমেদ লিটন ও কার্যকরী সদস্য হাজী আবু মো.শরিফুল হকরা কর্তা কিংবা তার নিকটস্থদের দ্বারস্ত হচ্ছে বলে একাধিক সুত্রে জানা যায়। কর্তা ছাড়াও তার স্ত্রী নাকি এ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে পারে জানান সেসুত্রটি। তবে কোন প্রকার হস্তক্ষেপ কিংবা আর্শীবাদ ছাড়া যদি এ নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয় তাহলে হয়তবা বিভিন্ন অপরাধের কারনে অনেক প্রার্থী ছিটকে পড়তে পারে ভোটারদের মুল্যবান রায়ের মাধ্যমে।

কারন হিসেবে ভোটাররা বলেন, এমপি সাহেবতো অনেক কিছুই জানেনা যে এ নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে ইচ্ছুক অনেক প্রার্থীই মাদক বিক্রিতে শেল্টার ও কিশোরগ্যাং এর আশ্রয়দাতা হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। আবার তিনি ( এমপি ) ঘোষনা দিয়েছেন মাদক,কিশোরগ্যাং,ভুমিদস্যুতাসহ নানা প্রকার অপকর্ম বন্ধ করবেন। তাহলে কিভাবে তিনি তা বন্ধ করবেন উক্ত অপরাধীদের অদৃশ্য ব্যক্তিদেরকে যদি তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন কিংবা ভোট ছাড়াই নির্বাচিত করে তোলেন তাহলে দমনের পরিবর্তে উল্টো কড়ালগ্রাস হিসেবেই আত্মপ্রকাশ করার সম্ভবনা রয়েছে।

তাই সাধারন ভোটারদের দাবী আগামী ৯ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের উপপনির্বাচনটি কর্তা ইচ্ছায় নয় সাধারন ভোটারদের অংশগ্রহনের মাধ্যমেই অনুষ্ঠিত হোক।